পটভূমিঃ
হিসাব ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের অবিসংবাদিত পূর্বশর্ত হচ্ছে-হিসাব পরিকল্পনার সঠিক তথ্যাদি এবং বিভিন্ন আয়-ব্যয়ের ধারাবাহিকতা। যা বিবেচনা রেখে এই ম্যানুয়ালটি প্রণীত হয়েছে। মূলত হিসাব ব্যবস্থাপনার জন্য এই ম্যানুয়ালটি সহায়ক হবে বলে মনে করি।
১. সাধারণঃ
ক. পল্লী বাংলা উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা পরিচালিত সকল প্রকল্পের জন্য আলাদা ব্যাংকে হিসাব খুলতে হবে এবং প্রতিটি প্রকল্পের জন্য আলাদা হিসাব খাতা-পত্র, রেজিষ্ট্রার এবং প্রয়োজনীয় নথি-পত্র সংরক্ষণ করতে হবে।
খ. প্রকল্পের খাত অনুযাযী খরচ করতে হবে। কোন অবস্থাতেই খাত বর্হিভূত ব্যয় করা যাবে না। বরাদ্দের চাইতে অধিক ব্যয় হলে, সেক্ষেত্রে নির্বাহী পরিচালকের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।
গ. টাকা গ্রহণ বা প্রদান সম্মূহের মাধ্যমে গ্রহণ এবং প্রদান ভাউচার তৈরী করতে হবে এবং প্রতিটি গ্রহণ এবং প্রদান ভাইচার অনুমোদনের পর তা নগদান বহি ও খতিয়ান বহিতে লিপিবদ্ধ করতে হবে। কোন অবস্থাতেই কোন পোষ্টিং পেন্ডিং রাখা যাবে না।
২. ব্যাংক হিসাবঃ
বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য আলাদা, আলাদা ব্যাংক হিসাব খুলতে হবে। এক্ষেত্রে নিমোক্ত নীতিমালা অনুসরন করতে হবে।
ক. ব্যাংক হিসাব পরিচালনার জন্য ০৩(তিন) জনের যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব খুলতে হবে। নির্বাহী পচিালকের/সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরকে বাধ্যতামূলক রেখে অপর ০২(দুই) জনের যে কোন এক জনের স্বাক্ষরে লেনদেন চলবে।
খ. প্রত্যেক মাসের শেষে ব্যাংক হিসাব মিলকরন প্রতিবেদন তৈরী করতে হবে।
গ. সংস্থার নামে চলতি, সঞ্চয়ী এবং এস,টি,ডি হিসাব খোলা যাবে।
ঘ. স্থানীয় এলাকার যে কোন ব্যাংক শাখায় উক্ত হিসাব খোলা যাবে।
ঙ. দাতা সংস্থার পরামর্শ মোতাবেক স্ব-স্ব প্রকল্পের জন্য প্রকল্পের নামে আলাদা আলাদা হিসাব খোলা হবে।
২.১ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা জমাকরণ পদ্ধতিঃ
ক. দাতা সংস্থা থেকে অর্পিত চেক সংস্থার মূল হিসাবে জমা দিতে হবে এবং মূল হিসাব থেকেও ট্রান্সফার/উত্তোলনের মাধ্যমে প্রকল্প হিসাব জমা দিতে হবে অথবা দাতা সংস্থা থেকে আগত চেক সরাসরি প্রকল্পের হিসাবেও জমা দেয়া যাবে।
খ. দাতা সংস্থা থেকে প্রেরীত ডিডি/টিটি সরাসরি প্রকল্প হিসাবে জমা দিতে হবে।
গ. জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সকল অনুদান সভাপতি/চেয়ারম্যান, সাধারন সম্পাদক/সদস্য সচিব এবং কোষাধ্যক্ষ/অর্থ সচিব যৌথভাবে গ্রহণ করতে পারবেন।
ঘ. সংস্থার সকল স্থানীয় আয়ের অর্থ বৈধ রশিদ মূলে নির্বাহী পরিচালক/ সমন্বয়কারী গ্রহণ করবেন।
২.২ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন পদ্ধতিঃ
ক. দাতা সংস্থার বাজেট দেখে হিসাবরক্ষক প্রত্যেক মাসে আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নামে চেক লিপিবদ্ধ করবেন এবং চেক রিকুইজেশন ফরম ও চেক নির্বাহী পরিচালকের স্বাক্ষর নিয়ে রাখবে।
খ. নির্বাহী পরিচালক মূল স্বাক্ষর দাতা হিসাবে স্বাক্ষর করবেন। তবে যেহেতু দাপ্তরিক প্রয়োজনে নির্বাহী পরিচালক প্রায়শই প্রধান কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান করেন সে কারনে হিসাবরক্ষক এক সপ্তাহ পূর্বেই চেক রিকুইজেশন ফরম এবং চেক তার স্বাক্ষর নিয়ে রাখবেন যেন কোন অবস্থাতেই কর্মসূচীর সাধারণ গতি ব্যাহত না হয়।
গ. নির্বাহী পরিচালকের স্বাক্ষরের পর হিসাবরক্ষক স্বাক্ষরকৃত চেক খানা নিরাপত্তার জন্য সাথে রাখবেন এবং অর্থ উত্তোলনের দিন অপর স্বাক্ষরকারীর স্বাক্ষর করিয়ে চেকখানা অফিস সচিবের নিকট প্রদান করবেন।
ঘ. অর্থ সমন্বয়কারী সংশ্লিষ্ট বিভাগ/অঞ্চলের নামে ইস্যূকৃত চেকখানা নিয়ে ব্যাংকে গমন করবেন এবং টাকা উত্তোলন করবেন। ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা পর্যন্ত তিনি নিজে ২,০০,০০০/- টাকা (দুই লক্ষ) টাকার উর্ধ্বে হলে ০৫(পাঁচ) জন মিলে ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে অফিসে আসতে হবে।
ঙ. যে সকল আঞ্চলিক কার্যালয়কে ব্যাংক হিসাব নেই সে সকল আঞ্চলিক কার্যালয়ে অর্থ-সমন্বয়কারী নগদ টাকা প্রধান কার্যালয়ে থেকে প্রতিনিধি মারফত পাঠাবেন। তবে ব্যাংক হিসাব খুলে ডিমান্ড ড্রাফট বাহক মারফত পাঠানো ত‚লনামূলকভাবে নিরাপদ।
চ. দিনশেষে বিলি বন্টনকৃত টাকার মধ্যে যত টাকা অব্যয়িত/উদ্ধৃত্ত থাকবে তা হিসাব শাখায় নিরাপদ হেফাজতে সংরক্ষণ করবেন। এক্ষেত্রে উল্লেখ থাকে যে, যদি ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকার উর্ধ্বে নগদ টাকা অব্যয়িত/উদ্বৃত্ত থাকে তবে অর্থ-সমন্বয়কারী নিজেসহ কমপক্ষে ০৩(তিন) জন নৈশকালে টাকার স্থলে রাত্রিযাপন করবেন এবং পরবর্তী কর্ম দিবসের শুরুতেই উক্ত টাকা ব্যাংক জমা/বিলিবন্টন নিশ্চিত করবেন।
২.৩ আঞ্চলিক কার্যালয় সমূহের অর্থ গ্রহণ এবং বিতরণ পদ্ধতিঃ
ক. আঞ্চলিক কার্যালয় সমূহের মধ্যে যে সকল আঞ্চলিক অফিসের ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে তারা প্রধান কার্যালয়ের প্রতিনিধির নিকট থেকে প্রাপ্ত ডিমান্ড ড্রাফট ব্যাংক একাউন্টে জমা করবেন এবং রিকুইজেশন ফরম পূরণ করতঃ প্রকল্পের বিপরীতে প্রকল্প ব্যবস্থাপক/আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক চেক ইস্যু করবেন এবং অর্থ উত্তোলন করে বিধিবদ্ধভাবে বিতরণ নিশ্চিত করবেন।
খ. যে সমস্ত আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যাংক হিসাব নাই সে সমস্ত কার্যালয়ের প্রকল্প ব্যবস্থাপক/আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক প্রধান কার্যালয়ের প্রতিনিধির কাছ থেকে নগদ টাকা বুঝে নিবেন। যদি উক্ত টাকা উক্ত দিনেই বিতরণযোগ্য হয় তবে বিতরণ করবেন। যদি উক্ত দিনে বিতরণযোগ্য না হয়, সেই ক্ষেত্রে অর্থ প্রাপ্তির ০২ (দুই) দিনের মধ্যে প্রধান কার্যালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে বিতরণ সমাপ্ত করবেন। যদি দিন শেষে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকার উর্দ্ধে উদ্বৃত্ত/অব্যয়িত টাকা থাকে সেক্ষেত্রে প্রকল্প ব্যবস্থাপক/আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকসহ নূন্যতম ০৩ (তিন) জন টাকার স্থরে রাত্রি যাপন করবেন এবং পরবর্তী দিবসের শুরুতেই উক্ত টাকা বিলি-বণ্টন নিশ্চিত করবেন।
৩. প্রমাণ-পত্রঃ (ভাউচার)
বিভিন্ন প্রকল্পের প্রমাণ-পত্র দুই পর্যায়ে প্রস্তুত ও বাস্তবায়িত হবেঃ
ক. কেন্দ্রীয় পর্যায়ঃ
১. দাতা সংস্থা থেকে আগত টাকার বিপরীতে গ্রহণ ভাউচার তৈরী করতে হবে।
২. প্রধান কার্যালয় থেকে আঞ্চলিক কার্যালয়ে প্রদানের ক্ষেত্রে প্রদান ভাউচার তৈরী করতে হবে।
৩. যে কোন ধরণের সমন্বয়ের ক্ষেত্রে জার্নাল ভাউচার তৈরী করতে হবে।
খ. আঞ্চলিক/প্রকল্প কার্যালয় পর্যায়েঃ
১. প্রধান কার্যালয় থেকে আগত টাকার বিপরীতে গ্রহণ ভাউচার তৈরী করতে হবে।
২. শাখা কার্যালয় থেকে যে কোন ধরণের খরচ কিংবা ব্যয়ের ক্ষেত্রে প্রদান ভাউচার তৈরী করতে হবে।
৩. যে কোন ধরণের সমন্বয়ের ক্ষেত্রে জার্নাল ভাউচার তৈরী করতে হবে।
প্রমাণ-পত্র (ভাউচার) এর কতিপয় নীতিমালাঃ
১. প্রতিটি ভাউচারে প্রস্তাবিত বাজেট আইটেমের খাত অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দলিলে মাধ্যমে ভাউচার তৈরী করতে হবে।
২. প্রতিটি ভাউচারে হিসাবের খাত, তারিখ ও ক্রমিক নাম্বার বসাতে হবে।
৩. প্রতি দিনের ভাউচার সেই দিনেই তৈরী করতে হবে।
৪. বর্ণিত ০৩ (তিন) ধরণের ভাউচার ০৩ (তিন) টি ফাইলে সংরক্ষণ করতে হবে।
৫. প্রতিটি ভাউচারের সাথে সংশ্লিষ্ট দলিল-পত্র সমূহ সংযুক্ত রাখতে হবে।
৬. ভাউচার প্রস্তুতকারী, যাচাইকারী ও অনুমোদনকারীর স্বাক্ষর থাকতে হবে।
৭. শুধুমাত্র সমন্বয়ের ক্ষেত্রে জার্নাল ভাউচার তৈরী করতে হবে।
৪. নগদান বহি (ক্যাশ বহি)
ক. ডাবল কলাম ক্যাশ বহি ব্যবহার করতে হবে যা ০২ (দুই) দিকে পাশাপাশি নম্বর ও ব্যাংক হিসাব থাকবে।
খ. প্রতিটি গ্রহণ ও প্রদান ভাউচারের নম্বর অনুযায়ী ক্যাশ বুকে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
গ. প্রতিদিনের সমাপনী টাকার পরিমাণ পরবর্তী দিনের প্রারম্ভিক পরে লিখতে হবে।
ঘ. ক্যাশ বুক খুব স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন করে লিখতে হবে। কোন প্রকারের ঘষামাজা অথবা মোছামুছি করা যাবে না। প্রয়োজনে একটানে কেটে স্বাক্ষর দিয়ে পূনরায় লেখা যেতে পারে।
ঙ. ক্যাশ বুকে হিসাবের খাত সমূহ স্পষ্ট করে লিখতে হবে এবং হিসাবের খাতের নীচে বিস্তারিত বিবরণ থাকবে।
৫. খতিয়ান বহিঃ (লেজার বহি)
ক. প্রস্তাবিত বাজেট লাইন আইটেমের খাত অনুযায়ী লেজার বুক তৈরী করতে হবে।
খ. তিন ঘরা বিশিষ্ট লেজার বুক ব্যবহার করতে হবে যেন ডেবিট, ক্রেডিট ও অবশিষ্ট্য তিনটি ঘর পাশাপাশি থাকে।
গ. ক্যাশ বুকে লিপিবদ্ধ করার পর পরই বিভিন্ন খাত অনুযায়ী লেজার বুকে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
ঘ. লেজার বুকে ভাউচার নং ও ক্যাশ বুকের ফলিও নং বসাতে হবে।
ঙ. লেজার বুকে কোন রকম ঘষামাজা করা যাবে না। প্রয়োজনে একটানে কেটে স্বাক্ষর দিয়ে পূনরায় লেখা যেতে পারে।
৬.মজুদ বহিঃ (স্টেক রেজিষ্টার)
ক. সকল উপকরণের জন্য একটি স্টক রেজিষ্টার বানাতে হবে।
খ. রেজিষ্টারে গ্রহণ, প্রদান এবং অবশিষ্টের পরিমাণ লিপিবদ্ধ করতে হবে।
গ. গ্রহণের ঘরে তারিখ, প্রদান এবং অবশিষ্ট্যের পরিমাণ লিপিবদ্ধ করতে হবে।
ঘ. প্রদানের সময় বিতরণ আদেশ পত্রের মাধ্যমে বিতরণ করতে হবে।
ঙ. প্রদানের ঘরে তারিখ, বিতরণ আদেশ পত্রের নং এবং পরিমান থাকবে।
চ. গ্রহণ ও বিতরণের বিয়োগফল অবশিষ্ট্যের ঘরে বসাতে হবে।
ছ. বছরে অন্ততপক্ষে দুইবার/আভ্যন্তরিণ অডিট টিম কর্তৃক মজুদ বই এবং বাহ্যিক মজুদ পণ্যের পরীক্ষা করবেন।
জ. বিভিন্ন পন্যের জন্য রেজিষ্টারে আলাদা পৃষ্ঠা ব্যবহার করতে হবে।
৭. ক্রয় পদ্ধতিঃ
প্রধান কার্যালয় অথবা প্রকল্প কার্যালয় কর্তৃক প্রকল্পের প্রয়োজনে যে কোন ধরণের ক্রয়ের ক্ষেত্রে নিæোক্ত নীতিমালা অনুসরণ করতে হবেঃ
ক. প্রত্যেক প্রকল্পের বিপরীতে আলাদা আলাদা ক্রয় কমিটি টেন্ডার কমিটি থাকবে। ক্রয় কমিটি/ টেন্ডার কমিটি প্রকল্পের প্রয়োজনে সভা করবেন এবং সভায় সিদ্ধান্ত নির্বাহী পরিচালককে জ্ঞাত করাবেন।
খ. থানা/আঞ্চল/শাখা পর্যায়ে স্বতন্ত্র ক্রয় কমিটি থাকবে যার গঠন হবে নিম্নরুপঃ
১.আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক আহ্বায়ক
২.প্রকল্প ব্যবস্থাপকসদস্য
৩.হিসাব রক্ষকসদস্য
৪.কর্মসূচী সংগঠকসদস্য
৫.সুপারভাইজারসদস্য
(আর.এম কর্তৃক মনোনীত)
গ. ক্রয় কমিটি/টেন্ডার কমিটির প্রস্তাব নির্বাহী পরিচালক কর্তৃক অনুমোদনের পর ক্রয় করা যাবে। তবে সর্বোচ্চ ১,৫০০/- (এক হাজার পাঁচশত) টাকা পর্যন্ত ক্রয়ের ক্ষেত্রে কমিটির সিদ্ধান্তেই ক্রয় করা যাবে।
ক্রয় সংক্রান্ত নীতিমালাঃ
১. ক্রয়ের পরিমাণ ১,৫০০/- (এক হাজার পাঁচশত) টাকা থেকে ৪৯,৯৯৯/- (উনপঞ্চাশ হাজার নয়শত নিরানব্বই) টাকা পর্যন্ত কোটেশনের মাধ্যমে ক্রয় করা যাবে।
২. ক্রয়ের পরিমাণ যদি ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অথবা তদুর্দ্ধে হয় তবে প্রেশ টেন্ডার আহ্বানের মাধ্যমে করতে হবে।
৩. ক্রয় অবশ্যই অনুমোদিত প্রকল্প বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট হতে হবে।
৪. দরপত্র সমূহ অথবা টেন্ডার সমূহ প্রদান ভাউচারের সাথে অথবা আলাদা ফাইলে সংরক্ষণ করতে হবে।
৮. বেতন ও ভাতাঃ
ক. সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের প্রত্যেক মাসের ৭ তারিখের মধ্যে বিগত মাসের বেতন/ভাতা প্রদান করা যাবে।
খ. চেকের মাধ্যমে বেতন/ভাতা প্রদান করা যাবে।
গ. সরাসরি হ্যান্ড ক্যাশের মাধ্যমে বেতন/ভাতা প্রদান করা যাবে না।
ঘ. বেতন ও ভাতা অবশ্যই পল্লী বাংলা উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা নীতিমালা/ দাতা সংস্থার বাজেট অনুযায়ী প্রদান করতে হবে।
ঙ. প্রতিটি প্রদানের জন্য গ্রহীতার স্বাক্ষর নিতে হবে।
চ. বেতনের আলাদা রেজিষ্টার ও ফাইল রাখতে হবে।
ছ. কর্তনের আলাদা রেজিষ্টার রাখতে হবে।
জ. প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন ব্যতিরেকে অগ্রীম বেতন/বর্ধিত বেতন প্রদান করা যাবে না।
ঝ. বেতন প্রদানের সময় রাজস্ব স্ট্যাম্প এর উপর স্বাক্ষর নিতে হবে।
ঞ. প্রধান কার্যালয়ের নির্ধারিত সময়-সীমার মধ্যে বেতন ও ভাতা প্রদান করতে হবে।
৯. অগ্রীম ও সমন্বয়ঃ
প্রকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে কোন সময় প্রয়োজনীয় বিবেচিত হলে অগ্রীম প্রদান করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে নিমোক্ত নিয়ম সমূহ মেনে চলতে হবেঃ
ক. এডভান্স পূরণ সাপেক্ষে এবং নির্বাহী পরিচালকের অনুমোদনক্রমে প্রকল্পের বিপরীতে অগ্রীম দেয়া যেতে পারে।
খ. পূর্বের অগ্রীম সমন্বয় করা না হলে কোন ক্রমেই নতুন অগ্রীম দেয়া হবে না।
গ. সকল প্রকার অগ্রীম একটি অগ্রীম রেজিষ্টারের লিপিবদ্ধ করতে হবে।
ঘ. কোন অবস্থাতেই ব্যক্তিগত কাজের জন্য অগ্রীম প্রদান করা যাবে না।
ঙ. সকল ভাউচার পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে এডভান্স ¯িøপ ফেরত দিতে হবে।
চ. যে কোন অগ্রীম অবশিষ্ট্য এক মাসের মধ্যে সমন্বিত হবে।
১০. যাতায়াত ভাতাঃ
ক. অফিসের কর্তব্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে পল্লী বাংলা উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা এর কোন কর্মচারীকে তাহার কর্মস্থলে ১৫ (পনের) কিলোমিটার বা তার অধিক দূরে যেতে হয় তখন সাধারণ স্থানীয় যাতায়াত ব্যবস্থা অনুসারে প্রকৃত ভাড়া দেয়া হবে।
খ. হিসাব রক্ষকের কাছে প্রকৃত যাতায়াত ভাড়ার একটি তালিকা সম্বলিত রেজিস্টার থাকবে যার আলোকে বিল নিরীক্ষা করতঃ অনুমোদনের জন্য নির্বাহী পরিচালকের নিকট পেশ করতে হবে।
গ. ভ্রমণ মাধ্যমে কর্মচারীদের ক্ষেত্রে কোচে ‘সাধারণ কোচ’ ট্রেনে ‘সুলভ’ ভাড়ার কেবলমাত্র প্রদান যোগ্য।
ঘ. ভ্রমণ বিলের সাথে অবশ্যই যাতায়াতের টিকিট সংযুক্ত করতে হবে। উচ্চ শ্রেণীর টিকিট সংযুক্ত করা হলেও ‘সুলভ’ অথবা ‘সাধারণ’ শ্রেণীর ভাড়া প্রদান করা হবে।
ঙ. ভ্রমণের জন্য অগ্রীম গ্রহণ অথবা দাপ্তরিক ভ্রমণের পূর্বে নির্বাহী পরিচালকের অনুমোদন পত্র এবং অগ্রীম ফরম হিসাব বিভাগে জমা দিতে হবে অনুরূপভাবে ভ্রমণ শেষে ফেরৎ আসার ০৩ (তিন) দিনের মধ্যেই ভ্রমণ ফরম, পূরণ পূর্বক হিসাব বিভাগে জমা দিতে হবে। নচেৎ পাওনা বিল তামাদি এবং আর্থিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হিসাব বিভাগ নির্বাহী পরিচালক বরাবরে অভিযোগপত্র দায়ের করবেন।
চ. যদি ভ্রমণ ভাতা যে প্রতিষ্ঠানে কর্মীকে প্রেরণ করা হয়েছে উক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই অগ্রীম হিসাবে গ্রহণকৃত টাকা ফেরত আসার ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টার মধ্যে জমা দিতে হবে। নচেৎ উক্ত কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ছ. পল্লী বাংলা উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা এর নিজস্ব পরিবহণ এ ভ্রমণ করলে কোন প্রকার ভ্রমণ ভাতা প্রদান করা যাবে না।
২. দৈনিক ভাতাঃ
ক. ঢাকা শহরে কাজের জন্য কোন কর্মচারীকে অবস্থান করতে হলে দৈনিক ভাতা বাবদ ১৫০/- (একশত পঞ্চাশ) টাকা প্রতিদিনের জন্য প্রদান করা হবে। (প্রতিদিনের দৈনিক ভাতার মধ্যে আহার, বাসস্থান ও স্থানীয় যাতায়াত ব্যয় সংযুক্ত হবে)। ঢাকার বাইরে কোন জেলা শহরে ১০০/- (একশত) টাকা হারে দৈনিক ভাতা প্রদান করা হবে।
খ. যাত্রা আরম্ভ এবং ফেরৎ দিনগুলোকে অর্ধদিন হিসাবে গণ্য করা হবে এবং অর্ধেক দিন হিসেবে দৈনিক ভাতা প্রদান করা হবে।
গ. ১২ (বার) ঘন্টার ও তার অধিক সময় অবিচ্ছিন্নভাবে সংস্থার কাজের অবস্থানকে (ভ্রমণ সময়) বাদ দিয়ে (পূর্ণ দিন এবং এর কম সময়কে) অর্ধ সময়/দিন হিসাবে গণ্য করা হবে।
ঘ. যদি পূর্ব অনুমোদনকৃত সময়ের চাইতে অধিক সময়কাল পর্যন্ত কোন কর্মী এমন কাজের বাইরে থাকেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই উপযুক্ত কারণ প্রমাণসহ নির্বাহী পরিচালক বরাবরে জমা দিয়ে নির্বাহী পরিচালকের অনুমোদনে ছুটি ভোগ এর কারণে কর্মী ব্যবস্থাপনা বিধি অনুসারে দন্ডিত হবে।
ঙ. কোন যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা অথবা পূর্ব অনুমোদিত ছুটি ছাড়া কোন কর্মী অনুমোদিত সময়ের চাইতে ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টা অথবা ততোদিক সময় অনুপস্থিত থাকলে ফেরৎ আসার যাতায়াত ভাতা, অর্ধদৈনিক ভাতা বাজেয়াপ্ত এবং বিনা অনুমোদনে ছুটি ভোগ এর কারণে কর্মী ব্যবস্থাপনা বিধি অনুসারে দন্ডিত হবে।
চ. যে প্রতিষ্ঠানে কর্মীকে প্রেরণ করা হয়েছে উক্ত প্রতিষ্ঠানে যদি দৈনিক ভাতা প্রদান করে তবে পল্লী বাংলা উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা এর নিকট দৈনিক ভাতার বিল করা যাবে না। এবং অগ্রীম গ্রহণ করে থাকলে ফেরৎ আসার ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টার মধ্যেই হিসাবরক্ষক এর কাছে জমা দিতে হবে।
ছ. নির্বাহী পরিষদের সদস্যগণের ক্ষেত্রে পরিষদ অনুমোদিত যাতায়াত ও খাবার খরচ পাবেন।
১১. যানবাহন ঋণঃ
ক. ঋণের আবেদনপত্রঃ
১. প্রকল্প ব্যবস্থাপক বা তদুর্ধের কর্মীবৃন্দ মোটর সাইকেল ঋণের আবেদন যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
২. কর্মসূচী সংগঠক ও মাঠ সহযোগীকবৃন্দ বাইসাইকেল ঋণের আবেদন যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
৩. যানবাহনের জন্য নির্ধারিত ছকে আবেদন করতে হবে।
৪. আবেদন পত্র অনুমোদনের পর যানবাহন প্রদান করা হবে।
৫. আবেদন পত্র অনুমোদনের পর যানবাহন প্রদান করা হবে।
খ. যানবাহনের মালিকানাঃ
১. যানবাহন ক্রয়কালীন সময় থেকে কোন কিস্তি বাকি থাকা পর্যন্ত যানবাহনের সমস্ত মালিকানা থাকবে সংস্থার।
২. কিস্তি পরিশোধের পর সংস্থার যানবাহনের মালিকানা পরিশোধকারীর নামে করে দেবে।
১২. তহবিল স্থানান্তর ও সমন্বয়ঃ
সংস্থার প্রয়োজনে ভিন্ন কোন প্রকল্পের তহবিল অপর প্রকল্পে নির্বাহী পরিচালকের লিখিত আদেশ পত্রের বিপরীতে স্থানান্তর করা যাবে এবং উক্ত প্রকল্পের তহবিল প্রাপ্তির সাথে উক্ত তহবিল ফেরৎ প্রদান করতে হবে।
১৩. আর্থিক প্রতিবেদনঃ
প্রধান কার্যালয়ের হিসাব বিভাগ/আঞ্চলিক কার্যালয় মাস শেষ হওয়ার ৭ (সাত) দিনের মধ্যে একটি আর্থিক প্রতিবেদন তৈরী করবে। মাসিক আর্থিক প্রতিবেদন নিমোক্ত বিষয়ের সমন্বয়ে হবেঃ
ক. প্রাপ্তি ও প্রদান হিসাব
খ. নগদান মিলকরণ বিবরণ।
১৪. সংস্থার আর্থিক উৎস সংক্রান্ত তথ্যাবলীঃ
ক.সদস্যদের ভর্তি ফি আদায়।
খ.সদস্যদের মাসিক চাঁদা আদায়।
গ.সদস্য বা কোন ব্যক্তির এককালীন অনুদান আদায়।
ঘ.জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনুদান আদায়।
ঙ.সরকারী-বেসরকারী দাতা সংস্থা সমূহের অনুদান আদায়।
চ.ব্যাংক সুদ আদায়।
ছ.সার্ভিস চার্জ আদায়।
জ.ঋণ উৎস।
ঝ. সংস্থার আয় বৃদ্ধিমূলক প্রকল্প থেকে অর্জিত আয় উৎপাদন দ্রব্যাদি বিক্রয়লব্ধ টাকা দিয়ে তহবিল গড়ে তোলা হবে।
ঞ. বিবিধ/অন্যান্য আয়।
১৫. হিসাব নিরীক্ষা সংক্রান্ত তথ্যাবলীঃ
ক.নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ দ্বারা হিসাব নিরীক্ষা করানো যাবে।
খ. সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সি.এ ফার্ম দ্বারা হিসাব নিরীক্ষা করানো যাবে।
গ. দাতা সংস্থার মনোনীত প্রতিনিধির দ্বারা হিসাব নিরীক্ষা করানো যাবে।
ঘ. হিসাব নিরীক্ষা কর্মে যে অডিট ফি লাগবে তা সংস্থার তহবিল হতে ব্যয় করা যাবে।
ঙ. বাৎসরিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রস্তুত করে সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সভায় আলোচিত এবং অনুমোদন নিতে হবে।
১৬. উপসংহারঃ
সংস্থার কার্যক্রমের বৃহত্তর স্বার্থে কার্যকরী কমিটি যে কোন মূহুর্তে এ বিধিমালা খানা পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন, সংযোজন, সংশোধন এবং বিয়োজন করার সর্বময় ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন। সংস্থার কার্যকরী কমিটির যে কোন সিদ্ধান্ত বা নিয়মাবলী চুড়ান্ত বলে বলে গণ্য করা হবে।